-চলো ফিরে যাই।
-আর একটু বসো না।
-সন্ধ্যা হয়ে এলো যে।
-তাতে কি? তুমি কি এখনও ছোটটি রয়েছো নাকি!
-মা চিন্তা করবে।
-তুমি শুধু মা মা কর কেন?
-মা ছাড়া যে পৃথিবীতে আমার আর কেউ নেই।
-কেন আমি কেউ না।আক্ষেপের সুরে বলে হৃদয়।
-তুমি তো আমার জান।
-হু জান না কি।তাহলে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে না।
-আরে বাবা বিয়ে হোক তারপর দেখব কত ভালবাসা।
-ইস কবে য়ে আমার ঘরে আসবে।
এভাবেই খুনসুটি চলে।চলে তাদের ভালোবাসা।
সেদিন বিকেলে হাটতে হাটতে আবার শোভার মার কথা আসে।শোভা বলে মা সবসময় আমাকে নিয়ে ভাবেন।মেয়ের কোথায় বিয়ে হবে,ছেলে কেমন হবে----
-কেন তোমার মাকে আমার কথা বলনি?
-বলেছিতো।একটু থেমে বলে,মা কি বলে জানো,মা বলে,তুই ভালোমতো জেনেছিস তাকে।
-তুমি কি বললে?
-আমি কি আমার জান সম্পর্কে খারাপ বলতে পারি।
-মা আমাকে দেখতে চাইলেন না।
-হ্যাঁ।বলেছেন একদিন নিয়ে আসিস।
-তা কবে নিয়ে যাচ্ছ?
-এত তাড়া কিসের?
-বাঃ,তাড়া থাকবে না।মাকে হাত করতে হবেনা!
-ও এই কথা। তা তোমার বাড়িতে কবে নিয়ে যাচ্ছ আমাকে।উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয় শোভা।
-চল আজকেই।
-না বাবা অত সাহস আমার নেই।যদি তোমার বাবা মা আমাকে পছন্দ না করেন।
-আমার বাবা মা সেরকম না। তারা ছেলের পছন্দকে মূল্য দেন।
-আমার মাও তেমন।
-কি শুধু এভাবেই দাড়িয়ে দাড়িয়ে তর্ক করে যাবে নাকি কোনখানে বসবে।
পুকুর পাড়ে এসে গাছের তলায় বসে দুজনে।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলছে।জেলা প্রশাসনের অধীনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।শোভা এসেছে।এসেছে তার মা।হৃদয়ও এসেছে।বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান দেখার জন্য।ওখানেই হৃদয়কে পরিচয় করে দেয় শোভা তার মায়ের সাথে।
পা ছুঁয়ে সালাম করে হৃদয়।
মা বলে,আমার মেয়ের পছন্দ আছে বলতে হবে।
লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে থাকে হৃদয়।
তোমার কথা অনেক শুনেছি আজ দেখলাম।আমরা মা মেয়ের বন্ধুর মত।তুমি তোমার বাবা মাকে একদিন বাসায় নিয়ে এসো।
নিশ্চয়ই।আপনিও একদিন আসুননা বাসায় বাবামার সাথে পরিচিত হবেন।
আসব অবশ্যই।
শোভা বলে মা অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। তুমি যাও।শোভার মা অন্য অনেকের সাথে মঞ্চে গিয়ে ওঠেন।
দুজনে একসাথে দর্শকের সারিতে গিয়ে বসে ।
অনুষ্ঠান শুরু হয়।
মঞ্চে শোভার মাকে বসতে দেখে অবাক হয় হৃদয়।তার মা এখানকার এক স্কুলের শিক্ষিকা।সেরকম বড় কোন স্কুল নয়।অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে!
কিছু জিজ্ঞেস করে না শোভাকে।অনুষ্ঠান দেখতে থাকে।অনুষ্ঠান চলতে থাকে।
হৃদয়ের মাথা ঘুরতে থাকে।সে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।সে কার পাশে বসে আছে।কাকে ভালবেসেছে? কোন মহিলার পা ছুঁয়ে সালাম করেছে।নিজেকে তার ধিক্কার দিতে মন চায়।সে কতই না ভুল করে ফেলেছে।
কোন কিছু না বলেই শোভার পাশ থেকে উঠে আসে হৃদয় অনুষ্ঠান স্থল থেকে।
অবাক হয় শোভা। কি হল তোমার, কোথায় যাচ্ছ?
শোভার কথার জবাব না দিয়ে অনুষ্ঠান স্থল থেকে চলে,যেতে থাকে হৃদয়।
শোভা বুঝতে পারে না হৃদয়ের এ আচরণের কারণটা কি।সে হৃদয়ের পিছু পিছু আসে।
কি হয়েছে তোমার?
তুমি থাক আমি গেলাম।
হৃদয় চলে যায়।শোভা মন খারাপ করে বসে অনুষ্ঠান দেখে।
পরদিন ক্যাম্পাসে যায়।হৃদয়ের খোঁজ করে।হৃদয়ের দেখা পায় না।পরদিনও কলেজে আসে না।হৃদয়ের ঠিকানা নিয়ে বাসায় যায়।
স্লামালাইকুম।হৃদয় আছে কি?
কে তুমি?
আমি শোভা।হৃদয়ের বন্ধু।
এসো ভিতরে।বসো।
ড্রইংরুমে বসতে দেন তিনি।
আমি হৃদয়ের মা। ও তোমাকে ভালবাসে ? ও তোমার কথা বলেছিল ।বাঃ বেশ সুন্দরতো তুমি।
তারপর একটু থেমে বলে,কি হয়েছে তোমাদের মধ্যে কোন ঝগড়াঝাটি?
না ঠিক সেরকম না।
ওরকম একটু মান অভিমান থাকতেই পারে।
ও বাসায় নেই?
কদিন থেকেই দেখি বেশ অস্থির।সারাক্ষনই বাড়িতে থাকে।কলেজে যায় না।আমাকেও কিছু বলে না।খায় না ঠিকমত।অল্পতেই রেগে ওঠে।কিছুক্ষন আগে বাইরে বেরিয়েছে।
আমিও ঠিক বুঝছি না।ঠিক আছে আমি তাহলে উঠি।
তুমি কিছু খেয়ে যাও।
না আজ না।
ঠিক আছে আমি ওকে তোমার সাথে দেখা করতে বলব।
পরদিন সকালে ক্যাম্পাসে দেখতে পায় হৃদয়কে।গাছের তলায় বসে আছে।
শোভা তার কাছে যায়।কিছুটা দুরত্ব রেখে তার পাশে বসে।
কি হয়েছে তোমার?
কিছু হয়নি।
এ কয়দিন ক্যাম্পাসে আসনি যে?
শরীর ভাল ছিল না।কাল বাসায় গিয়েছিলে কেন?শোভার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে হৃদয়।
তোমার খোঁজ করতে।
তার আগে তুমি তোমার বাবার খোঁজ কর।তোমার বাবা কে সেটা দেখ।তোমার পিতৃপরিচয় খোঁজ।বেশ রাগত স্বরে কথাগুলো বলে হৃদয়।
হৃয়ের এ আচরনে অবাক হয় শোভা। কি বলছে সে? কি হয়েছে তার?
সে অবাক হয়ে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,তোমার কি হয়েছে?তুমি এরকম আচরন করছ কেন?তোমাকে না বলেছি আমার বাবা কার একসিডেন্টে মারা গেছেন।
দেখো তিনি তোমার সত্যিকারের পিতা কিনা!
কি বলছে এসব হৃদয়।যাকে নিয়ে সে গর্ব করত তার মুখ থেকে এসব কি রকম কথা বেরোচ্ছে ।ভাবতে পারে না শোভা।তার দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে।তার ভালবাসার মানুষটি তাকে সন্দেহ অবিশ্বাস এর এক চোরাবালিতে ফেলে দিয়েছে।সে তার ভালবাসার মানুৃষটিকে খুঁজতে থাকে।
তুমি শান্ত হও হৃদয়।
শান্ত আমি ঠিকই আছি।তুমি বীরাঙ্গনার সন্তান। তোমার মা বীরাঙ্গনা এটা তুমি বলনি কেন?
ছিঃ ছিঃ আমি তোমাকে ভালবেসেছিলাম। এটা ভাবতেই আমার ঘেন্না লাগছে।
রাগে দুঃখে কাঁদতে থাকে শোভা।চিৎকার করে বলে,তুমি বীরাংগনা কি জানো,বোঝো।
আমি কেন,সবাই জানে সবাই বোঝে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদেরকে ছিঃ ছিঃৃৃৃৃৃৃ.----------- আমার বলতে ঘেন্না হচ্ছে।আমি তোমাকে নিয়ে সমাজে কি করে মুখ দেখাব।ভাগ্যিস বিয়ের আগে জেনেছি। বিয়ের পরে হলে যে কি হত।মানুষ আঙ্গুল দেখিয়ে বলত বীরাঙ্গনার মেয়ের জামাই।ছিঃ ছিঃ
উঠে দাড়ায় হৃদয়।
শোভাও ওঠে।সি চিৎকার করে বলতে থাকে, তুমি এত ছোট এত নীচ। তুমি মানুষকে সম্মান দিতে জান না। সম্মান করতে পার না।আমি তোমকে ভালবাসি না ভালবাসি না।
বাসায় ফিরে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষন কাদে শোভা।তার জীবনটা অনেক ছোট হয়ে আসে।তার কাছে মনে হয়,যে মানুষটা তাকে ছোট থেকে বড় করেছে তাকে পড়িয়েছে,মাতৃস্নেহে বড় করেছে সে মানুষটিকে তার ভালবাসার মানুষটি অপমান করেছে।ছোট করেছে।নিজের বাবামা কার একসিডেন্টে মারা যাবার পর ৫ বছর বয়সে এসে আশ্রয় নিয়েছিল খালার কাছে।সেই খালা তাকে কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি।বাবা মায়ের দুজনের দায়িত্ব পালন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধে হানাদাররা তার খালার সতীত্ব কেড়ে নিয়েছে।সমাজ তার সন্তানকে দুরে ফেলে দিয়েছে।স্বাধীন দেশে প্রতিনিয়ত সমাজের সাথে সংগ্রাম করে টিকে আছে।শোভাকেও মানুষ করে গড়ে তুলতে চেয়েছে।অথচ ভালবাসার মানুষটি সেই মহৎ মানুষটির জন্য আজ তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।
সে নিজেকে বীরাঙ্গনার সন্তান পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে।হৃদয় তার গর্বে আঘাত হেনেছে।কিন্তু সেতো হৃয়কে ভালোবাসে।সে তার মাকেও অনেক ভালবাসে।তার খালা সতীত্ব হারানোর পর সন্তান জন্ম দিয়েছিল।যে সন্তানের পিতৃত্বের পরিচয় ছিল না,নির্যাতিত নারীর স্বামী হতেও কেউ আগ্রহী হয়নি। তাইতো সমাজ তার অনাকাঙ্খিত সন্তানকে দত্তক দিয়েছে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে।
প্রতিনিয়ত সমাজের সাথে যুদ্দ করতে করতে খড়কুটোর মত আশ্রয় ধরে বেঁচে থাকবার জন্য সৃষ্টিকর্তা হয়তো শোভাকে পাঠিয়ে দিল তার কাছে।তাকেই ধরে জীবনেন বাকি দিনগুলো পার করতে থাকে সে।
কি হয়েছে বলতে চায় না তার মাকে শোভা। শুধু বলে ওর কথা আর বলো না মা।
ঠিকমতো খায় না,কলেজে যায় না। তার মা চিন্তায় পড়ে যান।বলে, কি এমন হয়েছে আমায় খূলে বল।
মার পীড়াপীড়িতে বলতে হয় শোভাকে।
মা বলে,আমি বীরাঙ্গনা বলে ও তোকে ভালবাসবে না,বিয়ে করবে না তাই কি হয়?তুই ওকে ভালবাসিস না?
ভালবাসতাম।
আমি ওকে সত্য কথা বলব।
না মা ও তোমাকে অপমান করেছে।
আমি ওর কাছে যাব।
না মা তুমি যাবে না।আমার মাকে আমি ছোট হতে দেব না।
তবুও আমি যাব।আমি দেশের জন্য এতকিছু করেছি,যে ত্যাগ করেছি।আমার মেয়ের সুখের জন্য এটুকু করবো না।
সেদিন বিকেলেই হৃদয়ের বাসার ঠিকানা যোগাড় করে চলে আসে তাদের বাসায়।
এটা কি হৃদয়দের বাসা।
জ্বী।আপনি------অবাক দৃষ্টিতে জবাবের অপোক্ষায় থাকেন হৃদয়ের মা।
আমি শোভার খালা।
অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন তিনি শোভার খালার দিকে।যেন কোন অতীত খুঁজছেন তার চেহারার মাঝে।
আপনি কি হৃদয়ের মা?
অনেকটা অন্যমনস্কভাবে অস্ফুট স্বরে বলে ওঠেন,হ্যা।
হৃদয় আছে কি?
ভয় সংকোচ এসে ভর করে হৃদয়ের মার মনে।তিনি কি তার সন্তানকে নিয়ে যেতে এসেছেণ।
আপনি কেন এসেছেন?অজানা আশংকায় জবাবের প্রতীক্ষায় থাকেন তিনি।
আমি ওকেই বলি।ডাকুন ওকে।
কি বলবে তাকে।এতদিন যে মিথ্যে পরিচয়ে মানুষ করেছেন হৃদয়কে আজ তিনি তাকে আসল পরিচয় বলে দেবেন,নিয়ে যাবেন তাকে তার মাতৃত্বের দাবী নিয়ে।
তাকে আর ডাকতে হয়না।হৃদয় ড্রইংরুমে আসে।শোভার মাকে দেখে চমকে ওঠে সে।বিরক্তির সাথে বলে আপনি?
হৃদয়ের মা তাড়াতাড়ি বলে উঠেন,উনি তোর কাছে এসেছেন।
আপনি কেন এসেছেন?পিতৃপরিচয়হীন মেয়েকে গছিয়ে দিতে।
কি বলছিস এসব?ধমকদিয়ে হৃদয়কে থামানোর বৃথা চেষ্টা করেন তার মা।
তুমি ওনাকে চেননা মা।উনি একজন বীরাঙ্গনা।উনাকে বল শোভার পিতা কে উনি বলতে পারবেনা।উনিতো বীরাঙ্গনা----
প্র্রচন্ড জোরে চড় বসিয়ে দেন হৃদয়ের গালে তার মা।বলেন তুই উনাকে অসম্মান করছিস।যে স্বাধীন দেশে মানুষ হয়েছিস,যাদের জন্য স্বাধীনতা পেয়েছিস তাদেরকে অপমান করছিস ছিঃ ছিঃ
এবার শোভার মা মূখ খুললেন,বললেন,আমি শুধু এটুকু বলতে চাই শোভা আমার মেয়ে নয়।ওর বাবা ছিল,মা ছিল।ওকে আমি গর্ভে ধরিনি।
না মা তুমি আমার মা।শোভা এসে মাকে জড়িয়ে ধরে।
তুই আবার এসেছিস কেন?
তোমায় নিয়ে যেতে মা।যে দেশের জন্য তোমার আত্মত্যাগ,সে দেশের সন্তানদের কাছে তোমায় অপমান হতে দেব না মা।চলো মা।
শোভার হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে,না বাবা তুমি বিশ্বাস কর ওর যখন বয়স ৪ কি সাড়ে চার তখন ওর বাবা মা রোড একসিডেন্টে মারা যায়।আমি ওর খালা।ওর বাবা মা দুজনেই ছিলেন ডাক্তার।যাচাই করতে চাইলে খোজ নিয়ে দেখতে পারো।
কাঁদতে কাঁদতে বলে শোভা না মা তুমিই আমার মা।আমি বীরাঙ্গনার সন্তান।চলো মা---
দাড়াও ।দাড়ান আপনি।হৃদয়ের মার ডাকে দাড়িযে পড়েন দুজনেই।
হৃদযের মা এগিয়ে যান হৃদয়ের কাছে।তার দিকে তাকিয়ে বলেন,আজ যে মেয়েকে বীরাঙ্গনার মেয়ে বলে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছিস সেই মেয়েই এখন দেখ কোন বীরাঙ্গনার ছেলেকে ভালবাসবে কিনা,বিয়ে করবে কিনা!
শোভার হাত ধরে হৃদয়ের মা বলে তুমি চলে যাও মা তুমি কোন বীরাঙ্গনার ছেলেকে বিয়ে করো না।যে ছেলে তোমাকে বীরাঙ্গনার মেয়ে বলে প্রত্যাখান করেছে তোমার ভালবাসাকে অপমান করেছে সেই ছেলে বীরাঙ্গনার ছেলে তাকেও তুমি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান কর।কেননা যে ছেলে জানেনা যারা এদেশের মায়েদের বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে দোষ তাদের,শাস্তি তাদের প্রাপ্য।তাদের ঘৃণা করা উচিত।সেইসব মায়েদের ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এটা ও জানেনা,ও নিজেও যে স্বাধীনতার ফসল ও বোঝে না।
কি বলছ এসব মা? অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাকে প্রশ্ন করে হৃদয়।
হ্যা আমি ঠিকই বলছি।তুই আমার সন্তান নস।
আমরা যাই।বাইরের দরজার দিকে শোভাকে নিয়ে পা বাড়াতে নেন শোভার খালা।
থামুন।পালিয়ে যাচ্ছেন কেন?আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি।নিশ্চিত হয়েছি যখন আপনার বোন দুলাভাইয়ের পরিচয় পেলাম।তারাইতো আমাদের হাতে আপনার সন্তানকে তুলে দিয়েছিলেন।আপনিও নিশ্চয়ই চিনতে পেরেছেন তাইতো পালাতে চাইছিলেন।
সে কথার জবাব না দিয়ে বলে,না না সেটা হবে কেন? ও আপনাদের সন্তান।ও আমার সন্তান নয়।ও কোন বীরাঙ্গনার সন্তান হতে পারেনা।---অঝোর ধারায় কাঁদতে থাকে তার মা।
চেয়ারে বসে কাঁদতে থাকেন তিনি।
মুহুর্তেই হৃদয়ের জীবনটা এলোমেলো হয়ে ওঠে।তার শরীরে পশুদের রক্ত।তার দত্তক মা গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে।বলে বাবা,তুই তোর মার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নে।তোরা একাত্তুর দেখিসনি।কিন্তু একাত্তুরের চি্হ্ন শরীরে বহন করছিস।তোরা জানিসনা কি ভয়ংকর সে সময়টা ছিল।এই বাংলাদেশে কত হাজারো মা বোন চিহ্ন্্ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে, তোরা তাদের সে ক্ষত সারিয়ে তোল।দেখবি দেশটা এগিয়ে যাবে।
হৃদয় এগিয়ে গিয়ে তার বীরাঙ্গনা মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।সে তার ভুল বুঝতে পারে।মা আমায় ক্ষমা করে দাও।আমি আমার মাকে অপমান করেছি,আমার দেশকে অপমান করেছি।
শোভার দিকে তাকিয়ে বলে,তুমি কি আমায় গ্রহন করবে?
আমি একজন বীরাঙ্গনার সন্তানের পুত্রবধু হতে চাই।যাতে আমাদের বংশধররা গর্ব করতে পারে আজীবন।
তাদের মা তাদের দুজনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।এ কান্না আনন্দের কান্না।যেন তার বুকে জড়িয়ে আছে দু"রঙ লাল সবুজ।তারা দুজন বাংলাদেশেনর পতাকা হয়ে জড়িয়ে রেখেছে তার মাকে।
২০ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৪০ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪